প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতি ২০২৩ (বুকলিষ্টসহ পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন)

প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতি ও পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন নিয়ে আমাদের আজকের এই পোষ্ট। এই পোষ্টে আমরা প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতি ও আনুষাঙ্গিক বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। ধৈর্য সহকারে সময় নিয়ে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন, আশা করি আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট হবে না।

প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতি ও পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন

শিক্ষকতা একটি মহান পেশা। যারা নিজের বাড়িতে পরিবারের সদস্যদের সাথে থেকে শান্তিপূর্ন জীবনযাপন করতে চান তাদের জন্য শিক্ষকতা পেশার বিকল্প আর কিছু হতে পারেনা। তাছাড়াও পৃথিবীতে শিক্ষকতার মত মহান পেশা বোধহয় আর একটিও নেই। 

একটু ভাবুন তো, আপনি চক হাতে বোর্ডে কিছু লিখছেন। আর বাচ্চা ছেলেমেয়েরা বোর্ডের দিকে তাকিয়ে আছে। 

লিখাশেষে আপনি তাদের দিকে তাকালেন। তারাও আগ্রহ নিয়ে আপনার দিকে তাকিয়ে আছে। আপনি পড়াবেন, তারা শিখবে। 

এই সুন্দর মুহূর্তগুলো কি অন্য কোথাও পাবেন? 

পাবেন না!

বাংলাদেশে প্রায় প্রতিবছরই প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা হয়। বিসিএস পরিক্ষার পরে প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষাই সবচেয়ে জনপ্রিয় ও গুরুত্বপূর্ণ।

আজকের ভিডিওতে আমরা প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ প্রস্তুতি আলোচনা করব। 

প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি

পূর্বে প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি একযোগে প্রকাশিত হলেও এবার, বিভাগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বিপিএসসি। ১ম ধাপে সিলেট, বরিশাল ও রংপুর বিভাগের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল প্রাথমিক শিক্ষক অধিদপ্তর, এবং ২য় ধাপে রাজশাহী, খুলনা ও ময়মনসিংহ বিভাগের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। 

১ম ধাপের তিন বিভাগের প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবে ১০ মার্চ ২০২৩ থেকে ২৪ মার্চ ২০২৩ ইং তারিখ পর্যন্ত। এবং 

২য় ধাপের তিন বিভাগের প্রার্থীরা ২০ মার্চ ২০২৩ থেকে ১৪ এপ্রিল ২০২৩ ইং তারিখ পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন করতে পারবে।

প্রাইমারি শিক্ষক নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখতে এখানে ক্লিক করুন।

প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার মানবন্টন  

প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা মোট ১০০ নম্বরের হয়ে থাকে।

পরীক্ষা হয় ২ ধাপে। প্রথমে লিখিত পরীক্ষা (MCQ) তারপরে ভাইভা। 

লিখিত পরীক্ষা (MCQ) পরীক্ষায় থাকেঃ ৮০ নম্বর। সময় ৮০ মিনিট বা ১ ঘন্টা ২০ মিনিট। 

মৌখিক পরীক্ষা অর্থাৎ ভাইভাতে থাকেঃ ২০ নম্বর। 

যারা লিখিত (MCQ) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবেন শুধুমাত্র তারাই মৌখিক (ভাইভা) পরীক্ষার সুযোগ পাবেন।

প্রাইমারি সহকারী শিক্ষক পদের বেতন কত?

প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষকদের বেতন জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ অনুযায়ীঃ ১১,০০০ থেকে ২৬,৫৯০ টাকা। (গ্রেড-১৩)

প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার যোগ্যতা কি?

শিক্ষাগত যোগ্যতা:

কোন স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় হতে দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএ সহ স্নাতক বা স্নাতক (সম্মান) অথবা সমমানের ডিগ্রী। ৪ স্কেলে ন্যূনতম ২.২৫ ও ৫ স্কেলে ন্যূনতম ২.৮ সিজিপিএ।

বয়সসীমা:

প্রার্থীর সর্বোচ্চ বয়সসীমা ২১-৩০ বছর। তবে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও শারীরিক প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের ক্ষেত্রে ন্যূন্যতম ২১ ও সর্বোচ্চ বয়স ৩২ বৎসর। বয়স নিরূপণের ক্ষেত্রে এফিডেভিট গ্রহনযোগ্য হবে না।

উল্লেখ্য, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিধি-১ শাখার ২২.০৯.২০২২ তারিখের স্মারক নং- ০৫.০০.০০০০.১৭০.১১.০১৭.২০-১৪৯ মোতাবেক যে সকল প্রার্থীর বয়স ২৫.০৩.২০২০ তারিখে সর্বোচ্চ বয়সসীমার মধ্যে ছিল, তারাও আবেদন করতে পারবেন।

প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার সিলেবাস কি?

MCQ  পরীক্ষায় বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও সাধারণ জ্ঞান থেকে সর্বমোট ৮০টি প্রশ্ন করা হয়। 

বিষয়ভিত্তিক মানবন্টন

বাংলা -২০বাংলা সাহিত্য- ৩
বাংলা ব্যাকরণ -১৭
 গনিত- ২০পাটিগনিত ৮/৯
বীজগনিত ৫/৬
জ্যামিতি ৫
 সাধারণ জ্ঞান- ২০বাংলাদেশ  বিষয়াবলী ৭/৮
আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী ৫/৬
সাম্প্রতিক  বিষয়াবলী ৫/৬
ইংরেজি – ২০
মৌখিক পরীক্ষা -২০

প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা পদ্ধতি

লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডাকা হবে। লিখিত পরীক্ষা নেয়া হবে এমসিকিউ পদ্ধতিতে। বাংলা, গণিত, ইংরেজি ও সাধারণ জ্ঞানের প্রতিটি বিষয় থেকে ২০টি করে মোট ৮০টি নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন থাকবে।

প্রাইমারি পরীক্ষায় কি নেগেটিভ মার্কিং থাকে? 

  • উত্তর: হ্যাঁ প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরিক্ষায় নেগেটিভ মার্ক থাকে। 
  • প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ নম্বর করে কাটা যাবে। অর্থাৎ ৪টি প্রশ্নের ভুল উত্তর দিলে কাটা যাবে ১ নম্বর। 

প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি

বাংলা

বাংলা অংশে ব্যাকরণের ওপর একটু বেশি জোর দিতে হবে। ৮ম ও ৯ম-১০ম শ্রেণির বোর্ড প্রণীত বাংলা ব্যাকরণ বইয়ের সব অধ্যায়গুলো উদাহরণসহ ভালোভাবে পড়তে হবে। কবি-সাহিত্যিকদের সাহিত্যকর্ম ও তাদের জীবনী সম্পর্কে ভালভাবে জানতে হবে। 

২০১৫ ও ২০১৮ সালের প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, বাংলা ব্যাকরণ থেকে ভাষা, বর্ণ, শব্দ, সন্ধি বিচ্ছেদ, উপসর্গ, অনুসর্গ, ধাতু, সমাস, কারক, বিভক্তি, বানান শুদ্ধি, বিপরীত শব্দ, বাগধারা, পারিভাষিক শব্দ, সমার্থক শব্দ ও এককথায় প্রকাশ থেকে প্রশ্ন করা হয়েছে। এছাড়াও সাহিত্য অংশে পঙ্ক্তি উল্লেখ করে কবির নাম, গল্প বা উপন্যাসের রচয়িতা কে? এ ধরনের প্রশ্ন ছিল।

ইংরেজি

ইংরেজি গ্রামারের ক্ষেত্রে Right forms of verb, Tense, Preposition, Voice, Parts of Speech, Spelling, Narration ও Sentence Correction-এর নিয়ম ভালভাবে জানতে হবে এবং গ্রামার বইয়ের উদাহরণ থেকে শেখার চর্চা করতে হবে। এছাড়াও Phrase and Idoims, Synonym, Antonym ভালোভাবে মুখস্থ করতে হবে। পরিক্ষায় ভালো করার জন্য বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন সমাধান করে প্র্যাকটিস করতে হবে। বিগত পরীক্ষায় ইংরেজি থেকে বাংলা অনুবাদ এসেছিল।

গণিত

গণিত বিষয়ে পাটিগণিতের ক্ষেত্রে পরিমাপ ও একক, ঐকিক নিয়ম, শতকরা, অনুপাত, সুদকষা, লাভক্ষতি ও ভগ্নাংশ, এবং বীজগণিতের সাধারণ সূত্রাবলী থেকে প্রশ্ন থাকে। মুখে মুখে ও সূত্র প্রয়োগ করে সংক্ষেপে ফলাফল নির্ণয় করার প্র্যাকটিস করতে হবে। যাতে প্রশ্ন দেখামাত্র সহজেই ফল বের করা যায়। জ্যামিতিরি ক্ষেত্রে ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ, বর্গক্ষেত্র, রম্বস, বৃত্ত ইত্যাদির সাধারণ সূত্র ও সূত্রের প্রয়োগ জানা থাকতে হবে। মাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠ্যবই যেমন ৮ম ও ৯ম-দশম শ্রেণির গণিত বই অনুসরণ করে প্র্যাকটিস করতে হবে।

সাধারণ জ্ঞান

সাধরণ জ্ঞানের প্রশ্ন বেশি আসে বাংলাদেশ অংশ থেকে বাংলাদেশের শিক্ষা, ইতিহাস, ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, ভূপ্রকৃতি ও জলবায়ু, সভ্যতা ও সংস্কৃতি, বিখ্যাত স্থান, বাংলাদেশের রাষ্ট্র ব্যবস্থা, অর্থনীতি ও বিভিন্ন দিবস থেকে প্রশ্ন আসে।

  • আন্তর্জাতিক অংশে বিভিন্ন সংস্থা, দেশ, মুদ্রা, রাজধানী, দিবস, খেলাধুলা, পুরস্কার ও সম্মাননা থেকে প্রশ্ন থাকে।
  • সাধারণ বিজ্ঞান থেকে বিভিন্ন রোগব্যাধি, খাদ্যগুণ, ভিটামিন ও পুষ্টি বিষয়ে প্রশ্ন আসতে পারে। নিয়মিত পত্রিকা পড়ার অভ্যাস করলে সাধারণ জ্ঞাণ প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সহজ হবে।

বিগত পরীক্ষায় যা এসেছে : বিগত দুই ধাপের পরীক্ষায় অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাস, কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে প্রশ্ন এসেছিল।

প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ গাইড কোনটা ভালো?

যারা প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরিক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাদের অনেকেই জানতে চান প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার জন্য কোন গাইড বা বই ভালো হবে। তাই নিচে আমরা প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ গাইড সম্পর্কে আলোচনা করেছি।

প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার গাইড/বই

প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় সাধারণত প্রতিটি বিষয়ে সবসময় নির্দিষ্ট কিছু টপিক থেকেই প্রশ্ন করা হয়। 

বাংলা

বাংলা ব্যাকরণ

  • নবম-দশম শ্রেণীর বাংলা ব্যাকরণ বই। 
  • অগ্রদূত/অভিযাত্রী প্রকাশনীর বই। 

বাংলা সাহিত্য

  • শীকর গ্রন্থ সমালোচনা, মোহসিনা নাজিলার বই পড়তে পারেন। বাংলা সাহিত্য থেকে সাধারণত ১ থেকে ২টি প্রশ্ন আসে। 
  • কাজী নজরুল ইসলাম, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জহির রায়হান, বঙ্কিমচন্দ্র, শরৎচন্দ্র, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় ও পল্লী কবি জসীম উদ্দীন সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিবেন। 

ইংরেজি

ইংরেজি গ্রামার

  • Cliff’s Toefl (ক্লিফস টোফেল) বইটির শুধুমাত্র গ্রামার অংশ পড়লেই চলবে। 
  • পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি নিতে বর্তমানে জাহাঙ্গীর আলম স্যারের Master English বইটি বেশ জনপ্রিয়। 

ইংরেজি সাহিত্য

ইংরেজি সাহিত্য থেকে প্রশ্ন খুবই কম আসে। বেশিরভাগ সময় আসেই না। ২০১৯ সালের ৯ সেট প্রশ্নের মধ্যে মাত্র ১টি প্রশ্ন এসেছিল। ইংরেজি সাহিত্যের জন্য উইলিয়াম শেক্সপিয়র, জন মিল্টন, জর্জ বার্নার্ড শ’র পরিচিতি ও তাদের বইগুলোর নাম মুখস্ত করে রাখতে পারেন। এছাড়াও বিগত সালের প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নগুলো দেখতে পারেন।

গণিত

গণিতের জন্য বর্তমানে বাজারে ২টি গাইড জনপ্রিয় তার মধ্য থেকে যেকোন ১টি পড়লেই হবে।

  • খাইরুলস প্রাথমিক ও প্রাক প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ সহায়িকা।
  • প্রফেসর’স প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ সহায়িকা।

সাধারণ জ্ঞান

সাধারণ জ্ঞান অংশে বাংলাদেশ, আন্তর্জাতিক, বিজ্ঞান, কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে প্রশ্ন আসে। 

  • বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়ের জন্য এমপিথ্রির বইগুলো পড়তে পারেন। 
  • কম্পিউটার এর জন্য ইজি পাবলিকেশন্স এর ১টি বই আছে, বইটি বেশ ভালো। 
  • বিজ্ঞান এর জন্য “ওরাকল বিজ্ঞান” পড়লেই চলবে। 
  • সাম্প্রতিক তথ্যের জন্য ২-৩ মাসের “কারেন্ট এফেয়ার্স” পড়ে নিবেন।  

বিষয়ভিত্তিক এই বইগুলোর পাশাপাশি আরো ২টি বই;  ১) বিগত বছরের সল্যুশন এর জন্য প্রফেসর’স এর গাইড, ২) প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ গাইড/ সহায়িকা হিসেবে প্রফেসর’স অথবা খাইরুলস এর একটি গাইড অবশ্যই পড়বেন। 

প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ভালো করার উপায়

১) সাধারণত খুবই বেসিক লেভেলর প্রশ্ন করা হয় প্রাইমারি নিয়োগ পরীক্ষায়। তাই ভয় না পেয়ে একটু ট্রিক্স খাটিয়ে পড়াশুনা করতে পারলেই হয়ে যাবে!

**নিজেকে যাচাই করার জন্য প্রতিদিন মডেল টেস্ট দিবেন। এতে করে আপনি কোন জায়গায় দুর্বল তা বুঝতে পারবেন। 

২) বিগত বছরগুলোতে আসা প্রশ্নের ব্যাখ্যাসহ সমাধান দেখে নিবেন। প্রতিটি প্রশ্ন সলভ করবেন। এতে আত্মবিশ্বাস বাড়বে এবং পরীক্ষা সম্পর্কে একটা আইডিয়া হয়ে যাবে। প্রতিটি প্রাইমারি নিয়োগ পরীক্ষায় বিগত সালের প্রশ্ন থেকে হুবহু প্রশ্ন কমন পড়ে, তাই প্রশ্নব্যাংক পড়লেই হুবহু ১৫-২০ মার্ক কমন পাবেন! 

৩) নিয়োগ পরিক্ষায় বাংলা ব্যাকরণ থেকেই ১৫টি’র বেশি প্রশ্ন আসে। ব্যাকরণের কিছু নির্দিষ্ট টপিক পড়লেই কমন পড়বে।

টপিক লিস্টঃ 

  • শব্দ, 
  • পদ, 
  • কারক-বিভক্তি, 
  • প্রকৃতি-প্রত্যয়, 
  • সন্ধি, 
  • সমাস, 
  • শুদ্ধ বানান,
  • পারিভাষিক শব্দ, 
  • বিপরীত শব্দ, 
  • বাগধারা, 
  • এককথায় প্রকাশ।

নবম-১০ম শ্রেণীর বাংলা ব্যাকরণ থেকে এগুলো পড়বেন। ব্যাকরণ অংশের জন্য এগুলো পড়লেই প্রশ্ন কমন পড়বে। এছাড়াও অগ্রদূত/অভিযাত্রী প্রকাশনীর বই থেকে ব্যাকরণ অনুশীলন করবেন। 

বাংলা সাহিত্য থেকে প্রশ্ন খুব কমই আসে। ১-২টি প্রশ্ন আসতে পারে। তাই পরিচিত লেখকদের সাহিত্যকর্ম নিয়ে পড়াশুনা করলেই চলবে। 

কাজী নজরুল ইসলাম, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জহির রায়হান, বঙ্কিমচন্দ্র, শরৎচন্দ্র, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় ও পল্লী কবি জসীম উদ্দীন এইসকল লেখদের সম্পর্কে অবশ্যই পড়বেন। 

৪) ইংরেজি বিষয়ের ক্ষেত্রেও গ্রামার প্রাধান্য পাবে। গ্রামার থেকে ১৮-১৯টি প্রশ্ন আসে। সাহিত্য থেকে প্রশ্ন আসেই না বললেই চলে। তাই গ্রামারে ১০০% ফোকাস দিতে হবে। 

বিগত নিয়োগ পরিক্ষার প্রশ্ন এনালাইসিস করে দেখা গেছে বারবার কিছু নির্দিষ্ট টপিক থেকেই প্রশ্ন এসেছে। 

টপিক লিস্টঃ 

  • Tense,
  • Parts of Speech, 
  • Preparation, 
  • Spelling, 
  • Right form of Verbs, 
  • Subject-Verb Agreement, 
  • Voice Change, 
  • Narration, 
  • Transformation, 
  • Sentence Correction, 
  • Conditional Sentence. 

এই টপিকগুলো Cliff’s Toefl (ক্লিফস টোফেল) বইয়ের গ্রামার অংশ থেকে পড়বেন। সাথে উদাহরণ গুলোও পড়ে নিবেন। অনেকসময় সময় হুবহু উদাহরণ থেকে প্রশ্ন তুলে দেয়া হয়।

পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি নিতে জাহাঙ্গীর আলম স্যারের Master English বই থেকে এই টপিকগুলো অনুশীলন করে নিবেন। তাহলে ইংলিশে আপনার প্রস্তুতি ১০০% হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ্। 

৫) গণিত অংশের জন্য যেকোন একটি গাইড বই থেকে এই টপিকগুলো অনুশীলন করে নিবেন। 

টপিক লিস্টঃ 

  • বীজগণিতের মান নির্ণয়, 
  • শতকরা, 
  • লাভ-ক্ষতি, 
  • সুদ-আসল, 
  • গড়, 
  • সংখ্যা, 
  • উৎপাদক, 
  • অনুপাত ও ভগ্নাংশ, 
  • লসাগু, 
  • গসাগু, 
  • ঐকিক নিয়ম।

**শতকরা, গড় ও বীজগণিতের মান নির্ণয় থেকেই বেশিরভাগ প্রশ্ন থাকে। জ্যামিতি অংশ থেকে বিভিন্ন প্রকার কোণ, বর্গক্ষেত্র, আয়তক্ষেত্র, ত্রিভুজ এগুলো পড়বেন। পরিক্ষায় খুবই সাধারণ প্রশ্ন আসে। তাই একটু ভালোভাবে অনুশীলন করলে সহজেই ভালো মার্কস তুলতে পারবেন। 

৬) সাধারণ জ্ঞাণ: বাংলাদেশ, আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি, কম্পিউটার এবং বিজ্ঞান সব মিলিয়ে ২০টি প্রশ্ন আসে। সাধারণ জ্ঞানের জন্য একটু বেশি পরিশ্রম করতে হবে। 

টপিক লিস্টঃ

বাংলাদেশ বিষয়াবলি থেকেই বেশি প্রায় ১২-১৪টি প্রশ্ন আসে।

  • বাংলার প্রাচীনযুগ ও মধ্যযুগ,
  • ভাষা আন্দোলন,
  • মুক্তিযুদ্ধ,
  • ৬ দফা,
  • মুজিবনগর সরকার,
  • বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান,
  • মোঘল আমল,
  • ইংরেজ আমল,
  • অর্থনৈতিক সমীক্ষা।

আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি থেকে খুব কমই প্রশ্ন আসে। ৩-৪টি প্রশ্ন আসতে পারে।

  • আন্তর্জাতিক সংগঠন,
  • সদর দপ্তর,
  • ভৌগোলিক অবস্থা,
  • বিশ্বের উচ্চতম, দীর্ঘতম, ক্ষুদ্রতম এগুলো গুরুত্বসহকারে পড়তে হবে। 

সাধারণ বিজ্ঞানের জন্য “ওরাকল বিজ্ঞান” বই থেকে বিজ্ঞানের বেসিক বিষয়গুলো পড়ে নিলেই হবে। 

কম্পিউটারঃ মাইক্রোসফট অফিসের বেসিক এপ্লিকেশনগুলো নিয়ে পড়াশুনা করবেন। গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলো ইজি পাবলিকেশন্সের গাইডে সুন্দরভাবে দেয়া আছে। এগুলো পড়লেই চলবে। 

পরিশেষে বলতে চাই, প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা আহামরি কঠিন কিছু না। একটু ভালোভাবে পড়াশুনা করলেই চান্স নিশ্চিত। তাই অযথা সময় নষ্ট না করে, এখনই প্রস্তুতি শুরু করে দিন। 

প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা আজকে এ পর্যন্তই। সবার জন্য শুভকামনা! আল্লাহ্ হাফেজ।

Leave a Comment