আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাতদিন ধরে পুলিশ বাহিনী অনুপস্থিত ছিল। তারা কাজে ফেরার জন্য বিভিন্ন শর্ত দিয়েছিলেন এবং সেনাবাহিনীর সহায়তায় কাজ শুরু করেন। অন্তর্বর্তী সরকার পুলিশ বাহিনী সংস্কারের অংশ হিসেবে তাদের পোশাক পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেয়।
নতুন ইউনিফর্মের ঘোষণা
পুলিশ বাহিনীর নতুন ইউনিফর্ম চূড়ান্ত করা হয়েছে। ২০২০ সাল থেকেই পোশাক পরিবর্তনের আলোচনা চলছিল এবং ২০২১ সালে বিভিন্ন ইউনিটের জন্য ট্রায়াল করা হয়। নতুন পোশাকের রঙ নির্বাচন করা হয়েছে—পুলিশের জন্য ‘আয়রন’, র্যাবের জন্য ‘অলিভ’, এবং আনসারের জন্য ‘গোল্ডেন হুইট’। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এ তথ্য জানান।
প্রতিক্রিয়া ও বিশ্লেষণ
নতুন ইউনিফর্ম নিয়ে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পোশাক পরিবর্তন বাহিনীর কার্যক্রমে মৌলিক পরিবর্তন আনতে পারে না। পুলিশের মানসিকতা, ট্রেনিং, এবং আচরণগত পরিবর্তন অপরিহার্য। সাবেক আইজিপি নুরুল হুদা ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক এয়ার কমোডর (অব.) ইশফাক ইলাহী চৌধুরী বলেন, পোশাকের পরিবর্তন বাহিনীর দক্ষতায় প্রভাব ফেলে না।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট
বাংলাদেশ পুলিশের পোশাকের ইতিহাস ব্রিটিশ আমলের সঙ্গে জড়িত। ১৮৪৭ সালে ব্রিটিশ অফিসার স্যার হ্যারি লুমসডেনের পরামর্শে খাকি রঙের পোশাক গৃহীত হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় বাঙালি পুলিশ সদস্যরা খাকি বা সাদা পোশাক পরিধান করতেন। ২০০৪ সালে পোশাক পরিবর্তন করে মহানগর পুলিশকে জলপাই রঙের পোশাক এবং জেলা পুলিশকে নীল রঙের পোশাক দেওয়া হয়।
শেষ কথা
পুলিশ বাহিনীর ইউনিফর্ম পরিবর্তন একটি কসমেটিক পরিবর্তন হতে পারে, তবে এটি বাহিনীর মনোভাব ও কার্যকলাপের পরিবর্তন নিশ্চিত করতে যথেষ্ট নয়। প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এবং সদস্যদের পেশাদারিত্ব ও মানবিক আচরণ নিশ্চিত করাই আসল চ্যালেঞ্জ।